 
								
                            
                       বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এখন থেকে মন্দ শ্রেণির খেলাপি ঋণ অবলোপনে সময়সীমা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি, ঋণ অবলোপনের পূর্বে কমপক্ষে ৩০ কর্মদিবস আগে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে লিখিত নোটিশ পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন তারা বিষয়টি আগে থেকেই অবগত থাকতে পারেন।
সম্প্রতি ১৮ ফেব্রুয়ারির পূর্বের নীতিমালা সংশোধন করে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়। পূর্বে, টানা দুই বছর ধরে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত ঋণ গুলোর অবলোপন করা যেত। তবে এখন থেকে, ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী এবং ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যেই, মন্দ ও ক্ষতিজনক অবস্থায় থাকা ঋণগুলো অবলোপন করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য সুপরিকল্পিতভাবে পুরোনো ঋণগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ঋণ অবলোপনের আগে কমপক্ষে ৩০ কর্মদিবস আগে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে লিখিত নোটিশ দিতে হবে। কারণ, ঋণ অবলোপনের পরও ডাকাতের দায়মুক্তি হবে না; অর্থাৎ, সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।
অবলোপন সংক্রান্ত অন্যান্য ধারাগুলিও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মৃত ঋণগ্রহীতার নামে বা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণ ব্যাংক নিজ বিবেচনায় অলোপন করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে, মৃত ব্যক্তির পরবর্তী উত্তরসূরি কি অর্থাৎ উপার্জনক্ষম উত্তরসূরি থাকছেন কি না, সেটি கருத்தে রাখতে হবে। এছাড়া, ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণ অবলোপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নগদ প্রণোদনা পেতে পারেন। প্রয়োজনে, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে এই নীতিমালা তৈরি করা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কোনো ঋণ অবলোপনের আগে ব্যাংককে অবশ্যই বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির সমস্ত প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে, ‘অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩’-এর আওতায় মামলা যোগ্য না হলে, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে বা মৃত ব্যক্তির নামে থাকা ঋণের কোনো অঙ্কের ক্ষেত্রে মামলা ছাড়াই ঋণ অবলোপন করা যাবে। অবলোপনের পূর্বে, দেড় লাখ টাকার বেশি সুদ বাদ দিয়ে শ্বাসে থাকা অর্থের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ঋণ আংশিকভাবে অবলোপন করা যাবে না এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া কোনো ঋণ অবলোপনের সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, বলেছেন, আগের তুলনায় ব্যাংকখাতে ডলার সংকট কমে এসেছে এবং রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, মন্দ ঋণের অবলোপনে শিথিলতা আনা ব্যাংক খাতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হবে এবং তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরও বাস্তবমুখী করে তুলবে।
Leave a Reply